বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলিয়ে দিতে দেশব্যাপী একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত করছে। যারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী ছিল এবং মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ মানুষ হত্যায় অংশ নিয়েছিল— আজ সেই একই চক্র দেশকে গ্রাস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ড আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন,
“আজকে প্রচার করা হচ্ছে, নাকি মুক্তিযোদ্ধারা ৭১-এ কিছুই করেননি, দেশের জন্য কোনো অবদান রাখেননি। যেন যারা আজ ক্ষমতায় এসেছে, তারাই সব করেছে! হাজার হাজার মানুষ শহীদ হয়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে, মা-বোনেরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন— এগুলো কি আমরা ভুলে যেতে পারি?”
তিনি আরও বলেন,
“১৯৭১ সালে যারা পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশ করে মানুষ হত্যা করেছে, নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে— তাদের সঙ্গে আপোস করা যায় না। আজও তারা ধর্মীয় আবেগকে ব্যবহার করে দেশটাকে গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে, একাত্তরের চেতনা সামনে আনতে হবে।”
এসময় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের একজন স্লোগান দেন—
“একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার— রাজাকার, আলবদর, সাবধান!”
বিএনপি মহাসচিব উল্লেখ করেন,
“মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় এবং ভাতার ব্যবস্থা করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান আমরা করেছি, ভবিষ্যতেও করব।”
হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“এই দেশে আমরা সবাই ভাই ভাই। কেউ যেন আমাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল সতর্ক করে বলেন,
“নির্বাচন বিলম্বিত করার চক্রান্ত চলছে। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া মানে দেশের সর্বনাশ। দেশের জন্য একটি নির্বাচিত সরকার অত্যন্ত প্রয়োজন।”
অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন,
“তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আছে। তবে দ্রুত তফসিল ঘোষণার ব্যবস্থা করে নির্বাচিত সরকার গঠনের পথ উন্মুক্ত করতে হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর করিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাঈম জাহাঙ্গীর ও সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আহম্মদ খান।